সুপারনেট হলো এমন একটি ব্যবস্থা যা একাধিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নেটওয়ার্ক বা ব্লকচেইনকে একটি বৃহওম নেটওয়ার্কে একত্রিত করে।
সুপারনেট সকল ব্লকচেইন নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে, ব্লকচেইনের মধ্যে সম্পদ এবং ডেটা স্থানান্তর সক্ষম করে সামগ্রিক সিস্টেমকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে। উপরুন্ত নেটওয়ার্কগুলো একসাথে যুক্ত থাকায় লেনদেন ফি অনেক কমে আসে।
সুপারনেট কি?
সুপারনেট মেটানেট নামেও পরিচিত। এটি এমন একটি নেটওয়ার্ক যা বিভিন্ন ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের মধ্যে আন্তঃকার্যযোগ্যতা এবং ক্রস-যোগাযোগের সক্ষমতা দেয়। এটি একাধিক ব্লকচেইন ব্যবহার করায় ডিফাই অ্যাপগুলিকে শক্তিশালী হয়ে উঠে। ব্লকচেইন প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনের জন্য নতুন একটি সুযোগ এটি।
ক্রস-চেইন যোগাযোগ হল সুপারনেটের আরেকটি বৈশিষ্ট্য যা একাধিক চেইনকে একে অপরের সাথে সংযোগ এবং লেনদেনের মতো সুবিধা দিয়ে থাকে।
সুপারনেট কিভাবে কাজ করে?
একটি সুপারনেট বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন প্রোটোকল এবং প্রযুক্তির প্রয়োজন হয় যেমন AtomicSwaps, CrossChainCommunicationProtocol এবং Sidechain ইত্যাদি। এই প্রযুক্তিগুলি বিভিন্ন ব্লকচেইনকে একে অপরের সাথে ইন্টারঅ্যাক্টযোগ্য করে তুলতে সক্ষম। সংক্ষেপে একে বিভিন্ন নেটওয়ার্কের মধ্যে এক ধরনের “সেতু” হিসেবে ভাবা যেতে পারে।
AtomicSwaps কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং সক্ষম করে। এটি একটি SmartContract ব্যবহার করে যা ট্রেড করা ক্রিপ্টো প্রথমে এনক্রিপ্ট করে, তারপর ট্রেড সম্পূর্ণ হলে অন্য ব্লকচেইনে তা আনলক করে। এভাবে কোনো সেন্ট্রাল একচেন্জ ছাড়াই একাধিক এক্সচেঞ্জের মধ্যে ক্রিপ্টো লেনদেন করা সম্ভব।
এবার আসি সুপারনেট তৈরির আরেকটি উপাদান নিয়ে। এক্ষেত্রে Polkadot ও Cosmos এর মতো ক্রসচেইন প্রটোকল ব্যবহার করা হয়। এই প্রটোকলসমূহ বিভিন্ন ব্লকচেইনের মধ্যে তথ্য ও ক্রিপ্টো আদানপ্রদানে সহায়তা করে।
সর্বশেষে সুপারনেট বাস্তবায়নে সাইডচেইনের প্রয়োজন হয়। সাইডচেইন হলো একটি অতিরিক্ত ব্লকচেইন যা প্রধান ব্লকচেইনের সাথে সংযুক্ত থাকে। মূল ব্লকচেইনকে প্রভাবিত না করেই নতুন প্রযুক্তি বা প্রটোকল পরীক্ষা করার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
সুপারনেটের সুবিধাসমূহ;
আইপি ব্যবহার: সুপারনেটে একাধিক নেটওয়ার্ক একসাথে যুক্ত থাকায় Ip Address আরো কার্যকারি ভাবে ব্যবহার সম্ভব। ফলে ব্যবহারে Ip Address সংরক্ষণ এবং হ্রাস রোধ সহজ হয়।
নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা: সুপারনেট নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা সহজতর করে। এখানে আলাদা আলাদা করে সব নেটওয়ার্কের কনফিগারেশন প্রয়োজন হয়না।
নিরাপত্তা: সুপারনেটের আরো একটি সুবিধা হলো এটি সহজে হ্যাকের শিকার হয়না। একাধিক নেটওয়ার্কের পরিবর্তে শুধু একটি নেটওয়ার্ক থাকায় হ্যাকাররা সহজে হ্যাক করতে পারেনা।