২০২১ সাল ছিল উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের সফলতার বছর। এবছর তারা মোট ৪০ কোটি ডলার সমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে,জানিয়েছে ব্লকচেইন গবেষণা প্রতিষ্ঠান Chainalysis। ব্যাংকসহ ক্রিপ্টোকারেন্সী বেচাকেনার প্লাটফর্ম ই মুলত এই হ্যাকারদের মুল টার্গেট। গতবছর বেশ কয়েকবার ঘটা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয় হ্যাকাররা।
২০২০ সালে যেখানে মাত্র ৪বার বড় হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটে, ২০২১ এ গিয়ে তা বেড়ে দাড়ায় ৭ বার।
২০২০ সালে হ্যাক করা ক্রিপ্টোর মূল্য ২০২১ গিয়ে ৪০% বেড়ে গিয়েছিল।যদিও এটা কিছুই না, যেখানে ২০২০ থেকে ২০২১ এ এসে বিটকয়েন এর দাম বেড়েছে ৩০৩%, অন্যদিকে ২য় বৃহত্তম ক্রিপ্টো ইথেরিয়ামের দাম বেড়েছে ৪৭২%। উত্তর কোরিয়ার চুরি করা অর্থের প্রায় ৫৮% ই হল ইথেরিয়াম। অন্যদিকে ২০% হল বিটকয়েন।
ক্রিপ্টোকারেন্সী হ্যাকের জন্য বিভিন্ন কায়দা অবলম্বন করে হ্যাকাররা। এগুলোর মধ্যে একটি হল ফিশিং নোডস। এর মাধ্যমে টার্গেট করা ব্যক্তিকে প্রলুব্ধ করে,তার ক্রিপ্টোকারেন্সী একাউন্টের তথ্য চুরি করে হ্যাকাররা। তথ্য চুরিতে আরো ব্যবহার করা হয় ম্যালওয়ার।চুরি করা তথ্য ব্যবহার করে ক্রিপ্টোকারেন্সীর হট ওয়ালেট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয় তারা। পরে এসব অর্থ ট্রান্সফার করা হয় উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন একাউন্টে।
এসব হট ওয়ালেট ইন্টারনেটের সাথে সরাসরি সংযুক্ত থাকার কারনে, সহজেই অসচেতন ক্রিপ্টোধারীদের থেকে অর্থ লুফে নিতে সক্ষম হয়,এই হ্যাকাররা।দেশটির কুখ্যাত লেজারাস ( Lazarus) গ্রুপই এই হ্যাকিং এর সাথে জড়িত বলে ধারনা করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞায় থাকা এই হ্যাকার গ্রুপকে নিয়ন্ত্রণ করে উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা। এর আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চালানো হ্যাকিংয়ের নাটের গুরু এই হ্যাকাররা।
প্রতিবছর এরা প্রায় ২০ কোটি ডলার সমমূল্যের ক্রিপ্টো চুরি করে। লেজারাস গ্রুপ kucoin (জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সী এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্ম) কে টার্গেট করেছিল, এবং প্রায় ২৫ কোটি ডলারের ক্রিপ্টো নিতে সক্ষম হয়
হ্যাকিং করা এসব অর্থ উত্তর কোরিয়া ব্যবহার করে, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং পরমাণু কর্মসূচীতে, অভিযোগ জাতিসংঘের।
উত্তর কোরিয়ার এসব হ্যাকারের উৎপাতে অতিষ্ঠ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির Department of Justice জানিয়েছে, ব্যাংক থেকে শুরু করে হলিউডের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সবই নিশানায় এসব হ্যাকারদের।