ম্যারিল্যান্ডে লিয়াম ঘেরশ্যোনি নামের বিশ বছর বয়সী এক বাসিন্দা তার বাবার বিটকয়েন হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে বাবার চায়ের সাথে ওষুধ মিশিয়ে খাইয়েছে বলে খবরে জানা গেছে।
বাবার ৪০০,০০০ ডলার মূল্যের বিটকয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি একাউন্টের এক্সেস নেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে ম্যারিলেন্ডের ওই বাসিন্দা বাবার চায়ের সাথে ওষুধ মিশিয়ে দেন বলে জানা গেছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, মেরিল্যান্ডের বেথেসডা-র লিয়াম ঘেরশ্যোনি তার বাবাকে অজ্ঞান করার অসৎ উদ্দেশ্যে বাবার চায়ের মধ্যে বেনজোডিয়াজেপাইন নামক এক ধরনের বিষণ্ণতা উদ্রেককারী একটি ওষুধ মিশিয়ে দেন।
তার বাবা অজ্ঞান হওয়ার পরে, ঘেরশ্যোনি তার বাবার ফোন ব্যবহার করে $৪০০,০০০ মূল্যের বিটকয়েন অন্য একটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে পারে যার নিয়ন্ত্রণ তার নিজের হাতে ছিলো। পরে তিনি এই তহবিলের প্রায় ৬০% ইথেরিয়াম ক্রয় করেন।
ঘেরশ্যোনি তার বাবার জন্য রেখে যাওয়া একটি নোটে লিখেছিলেন, “এটা এমন হওয়ার কথা ছিলো না! আমি আপনাকে সেরা অবসর দিতে যাচ্ছি।”
তার বাবা অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে ঘুম থেকে ওঠেননি। দুই দিন পর,তাকে তার বন্ধু বেডরুমে অচেতনভাবে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পানিশূন্যতা এবং শরীরের তীব্র কর্মহীনতা থেকে সেরে উঠতে তিনি চার দিন সময় নিয়েছিলেন।
একটি সাক্ষাৎকারে ঘোরশ্যানি বলেন “আমি যখন ওষুধটা ব্যবহার করছিলাম তখন আমি অনেক পাগলাটে এবং কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে উঠেছিলাম। আমাকে বাকীটা জীবন এই অপরাধবোধ ও লজ্জা বহন করে চলতে হবে।”
এই বিষয়টি মেনে নিয়েই আমি এটার সাথে নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাই।
ঘেরশ্যোনির বাবা বলেন ঘেরশ্যোনি বলেছিল, তার বাবা তার ক্রিপ্টো হোল্ডিং এর ব্যাপারটা নিয়ে খুব আবেগপ্রবণ ও আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি আরো বলেন, সন্তানের ব্যবহার করা ওষুধে বেনজোডিয়াজেপাইন এবং কোকেন অন্তর্ভুক্ত ছিল যা প্রতিদিন তার স্মৃতিশক্তিকে আরো দুর্বল করে তুলতে থাকে।
তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, “আমি ভেবেছিলাম আমি তাকে হারাতে যাচ্ছি।”
তিনি তার ছেলের কথা স্মৃতিচারণ করে বলেছিলেন যে, তার ছেলে বলেছিল তাকে তার ক্রিপ্টো বিক্রি করতে হবে।
বাবার চায়ে ওষুধ মিশিয়ে দেয়ার ঘটনার পরের দিনগুলিতে তার বাবা ফোন কলে সাড়া না দেওয়ায় ঘোরশ্যানি এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং তার বাবার প্রাক্তন বান্ধবীকে তার উদ্বেগের কথা জানান। পরে সে পালাক্রমে, পুলিশকে ফোন করে। মামলার প্রসিকিউটররা রিপোর্টে জানিয়েছেন , ঘেরশ্যোনি তার বাবাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছেন বলে এমন কোন প্রমাণ পাননি। তবে, মাদক সেবনের মাধ্যমে তাকে অজ্ঞান করে গুরুতর শারীরিক আঘাত করার উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু ঈশ্বরের কৃপায়, মিঃ ঘেরশ্যোনি এখনও আমাদের সাথে আছেন, ”আদালতে সহকারী রাজ্যের অ্যাটর্নি ডোনা ফেন্টন এমনটাই জানিয়েছেন।
ঘেরশ্যোনি এখন কোথায়?
ঘেরশোনি এখন একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে একটি গ্রুপ হাউজে থাকে। তার বাবা বিশ্বাস করেন যে সে একা থাকতে চায় এখন। “যদি কেউ তার সাথে দেখা করতে চায় যারা তার আগের পরিচিত, তবে সে তাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে তাদের একটি মিটিংয়ের মাধ্যমে দেখা করতে হবে,”
ঘেরশ্যোনির মা, যিনি একজন জনস্বাস্থ্যসেবী তিনি জানিয়েছেন তার ছেলের মধ্যে বর্তমানে কিছু পার্থক্য দেখছেন।
তিনি বলেন, “আমি শুনেছি যে সে এখন চিকিৎসার ব্যাপারে আন্তরিক যা আগে তার মধ্যে দেখা যায়নি।”
সে আগের চেয়ে সহৃদয়বান হয়ে ফিরে এসেছে বলে ধারণা করছেন।
অন্যদিকে ঘেরশ্যোনি জানান, “আমি অবশ্যই আমি আমার বাবার কাছে নিজের কৃতকর্মের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছি। কিন্তু আমার মনে হয় আমি শুধু এটাকে মুখে না বলে আমি কতটা পরিবর্তিত হয়েছি তা আমার ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে তাকে এবং নিজেকে প্রমাণ করে দেখাতে হবে।”